Tuesday, February 12, 2013

GULITE MRITYU












পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন
গার্ডেনরিচের ঘটনায় পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ পুলিশেরই নিচুতলার একাংশ৷ বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, আগের দিন রাতেই গণ্ডগোলের আঁচ পাওয়া সত্ত্বেও কেন মঙ্গলবার সকাল থেকেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি? কেন পদস্থ কর্তারা নিজেরা আগে থেকে ঘটনাস্থলে হাজির হননি? শাসক দলকে বাড়তি সুবিধা দিতেই কি শীর্ষ কর্তাদের উদাসীনতা?
এদিন সকালে হরিমোহন ঘোষ কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া নিয়ে গন্ডগোলের সময় প্রকাশ্যে গুলি চলল৷ নিহত হলেন সাব ইন্সপেক্টর তাপস চৌধুরি৷
শহরের বুকে এভাবে দুষ্কতীরা তাণ্ডব চালালেও পুলিশের ভূমিকা কী? মঙ্গলবার সকালের এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা ঘিরে পুলিশেরই নিচু তলার একাংশে তৈরি হয়েছে চরম ক্ষোভ৷ 
হরিমোহন ঘোষ কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল হতে পারে এই আশঙ্কা অনেক আগে থেকেই ছিল৷ সোমবার রাতেই গণ্ডগোলের আঁচ পান পুলিশ কর্তারা৷
সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ কলেজের কাছেই পাহাড়পুর রোডের একটি ক্লাবে বিস্ফোরণ ঘটে৷ পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে একজন স্থানীয় ১৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জিত্ শীলের ছেলে অভিজিত্ শীল৷  
পুলিশের দাবি, আহতরা স্বীকারও করে যে, হরিমোহন ঘোষ কলেজের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন অশান্তি হতে পারে, এটা ভেবেই বোমা বাঁধা হচ্ছিল৷
আর এখানেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷ বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন, আগের দিন রাতেই গণ্ডগোলের আঁচ পেয়েছিল পুলিশ৷ তাহলে কেন 
মঙ্গলবার সকাল থেকেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি? কেন পদস্থ কর্তারা নিজেরা আগে থেকে ঘটনাস্থলে হাজির হননি 
এদিন সকালে দুপক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ হাতাহাতি হওয়ার পরে গুলি চলে, বোমা পড়ে৷ বিভিন্ন মহলে তাই প্রশ্ন, কেন তত্ক্ষণাত্ বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পাঠানো হল না? কেন তখনও টনক নড়ল না কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের? সাম্প্রতিককালে একাধিক কলেজ নির্বাচনে যখন গণ্ডগোল হয়েছে, তখন কেন গার্ডনেরিচের এই কলেজে এত বহিরাগতদের জমায়েতের সুযোগ দিল পুলিশ? যদি আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হত তাহলে কি সাব-ইন্সপেক্টর তাপস চৌধুরীকে বেঘোরে গুলি খেয়ে প্রাণ হারাতে হত? স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি গণ্ডগোলের আঁচ পাওয়ার পরেও পুলিশের আগাম সতর্কতা না নেওয়ার নেপথ্যে কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে? 
পুলিশ বলছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ছাত্র পরিষদের মধ্যে গণ্ডগোল, তাহলে কি শাসক দলকে বাড়তি সুবিধা করে দিতেই নিষ্ক্রিয় থাকলেন পুলিশ কর্তারা? কোনও বিশেষ চাপের কারণেই কি সব জেনেবুঝেও পুলিশের পদস্থ কর্তাদের এই উদাসিনতা? পুলিশের উপরতলায় কি কোনও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে? শাসক দলের অঙ্গুলিহেলনেই কি কড়া পদক্ষেপ করতে ভয় পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের? 
পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের হেন আচরণেরই কি শিকার হতে হল তাপস চৌধুরীর মতো নিচুতলার এক পুলিশকর্মীকে? যাঁরা শীর্ষকর্তাদের
নির্দেশে দায়িত্ব পালনে ঝাঁপিয়ে পড়েন, সেই নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের রক্ষা করবেন কে? সেই দায়িত্ব কি উপরতলার কর্তাদের নয়? তাহলে কিসের ওপর ভরসা করে তাঁরা কাজে ঝাঁপাবেন? পুলিশের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে কিন্তু এই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে৷ রাজনৈতিক চাপ, কর্তাদের দ্বিধা-দন্দ্বের জেরে ক্ষোভে ফুঁসছে তাঁদের একাংশ৷ আর যাঁদের ঘরের ছেলে আর কোনওদিন ঘরে ফিরবে না, তাঁদের ঘরে এখন অন্ধকার, আর চোখের জল৷ হয়ত আর্থিক সাহায্য মিলবে, চাকরি হবে, কিন্তু চোখের এই জলের মূল্য কি কেউ চোকাতে পারবে? 

Courtesy : abp ananda 12.02.2013.


No comments:

Post a Comment